নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের গুয়াখোলায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন এবং ও ঝাড়ু মিছিল করেছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সহকারী অধ্যাপক রমেশ চন্দ্র অধিকারী, শেখহাটি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অসীম কুমার পাল, বিপ্রদাপ্রসন্ন মল্লিক, অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিদর্শক সুধীর কুমার পাল, স্মৃতি পাল ও সুলভ অধিকারী প্রমুখ।
মানববন্ধনে তারা বলেন, গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী ওই শিক্ষক (৪০) শিক্ষকতার আড়ালে বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও হয়রানি করে আসছিলেন।
গত ১৮’জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে এক ছাত্রীকে পড়ানোর কথা বলে বিদ্যালয়ের দোতলার নির্জন কক্ষে নিয়ে যান। এ সময় ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করেন। বিষয়টি সহপাঠীদের জানায় ওই ছাত্রী। পরে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে গিয়ে মাকেও বিষয়টি জানায়।
এ ঘটনার আগে করোনার টিকা নিয়ে নড়াইল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার অজুহাতে সেদিনও যৌন নির্যাতন করেন ওই শিক্ষক। ছাত্রী ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাকে পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেন। এছাড়াও ওই শিক্ষক আরও কয়েকজন ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করেছেন। আমরা এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা মহান শিক্ষকতা পেশা থেকে ওই শিক্ষকের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
মানববন্ধন শেষে শতাধিক নারী-পুরুষ ঝাড়ু ও জুতা হাতে নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন।
এ বিষয়ে গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা গত রবিবার শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার পর শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাটি জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মঙ্গলবার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনা তদন্তে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রতন ভৌমিককে আহ্বায়ক, সহকারী প্রধান শিক্ষক শিখা রাণীকে সদস্য করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক বলেন, ‘আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রতিপক্ষ মানববন্ধন ও মিছিল করেছে। ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো। আমি এ ধরনের ঘটনায় জড়িত নই।’
পাঠকের মতামত